জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মেহেরপুর।
দরবেশ মেহেরল্লাহর পূন্যময় স্মৃতি বিজড়িত এবং তাঁরই নাম অনুসারে ও মহান স্বাধীনতা স্মৃতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগরের গৌরবময় স্মৃতিতে ধারণ করা এই মেহেরপুর এক সময় আউল-বাউল ও জারি সারির কোলাহলে মুখর ছিল। কিন্তু একটু পরিতাপ করেই বলতে হয় শিক্ষার নিম্নহার ও আর্থিক টানাপোড়েনে এই কোলাহালে যেন বেশ খানিকটা ভাটা পড়েছে। মেহেরপুরের অর্থনীতি পূর্ণমাত্রায় কৃষি নির্ভর। শিল্প কলকারখানা গড়ে না উঠায় কর্মসংস্থানের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। হয়তবা এই কারণেই আমাদের সংস্কৃতির বিকল্প ঘটেনি তথাপ প্রচেষ্টা রয়েছে নিরন্তর।
বেসরকারিভাবে সাহিত্য সাংস্কৃতিক চর্চার পাশাপাশি মেহেরপুরের সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে বিরতিহীনভাবে সেবা দিয়ে এসেছে বর্তমানের মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী। এই একাডেমী ১৯৬৭ সালে মেহেরপুর মহকুমা আটর্স কাউন্সিল নামে আত্ন প্রকাশ করে এবং ১৯৮৮ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী হিসেবে প্রকাশ ঘটে। দীর্ঘদিন মেহেরপুর শিল্পকলা একাডেমী নিজস্ব কোন স্থান ছিলনা যে কারণে তেমন সুযোগ ছিলনা এই একাডেমীর মাধ্যমে জেলার সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো। শুরু থেকে দীর্ঘদিন মেহেরপুর পাবলিক লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ নামমাত্র ভাড়ায় শিল্পকলা একাডেমীকে একটি কক্ষ প্রদান করেছিল। অবশেষে এই লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষই মেহেরপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সূদৃঢ় করার লক্ষে লাইব্রেরির দশ শতক মূল্যবান জমি শিল্পকলা একাডেমীকে দান করেন। জমি প্রদানের ব্যাপারে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ মমতাজুর রহমান ও লাইব্রেরির সম্পাদক জনাব রবিউল হোসেন বাঘা এর বিশেষ অবদান রয়েছে।
সাবেক জেলা প্রশাসক জনাব মমতাজুর রহমানের প্রচেষ্ঠায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে ১৬ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। এই টাকা দিয়েই পরবর্তী সাবেক জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ ইছাহক আলী ও জনাব ফারুক আহমেদ এর প্রচেষ্টাবলে শিল্পকলা একাডেমীর নিজস্বভবন নির্মিত হয়েছে। পরবর্তীতে আরো অনুদান প্রাপ্তির মাধ্যমে এর উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। সাংস্কৃতিক বিকাশে শিল্পকলায় চারুকলা, সাধারণ সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, তালযন্ত্র বিভাগ চালু রয়েছে এবং বর্তমানে কবিতা আবৃত্তি নাট্য বিভাগ ও নৃত্য বিভাগ চালু করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীকে স্বার্থকভাবে পরিচালনার লক্ষে অদ্যবধি সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন জনাব মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক খান, রুহুল কুদ্দুস টিটো, শ্রী পল্লব ভট্টাচার্য্য, এ্যাড. ইব্রাহিম শাহীন, হাসানুজ্জামান মালেক, শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু (ভারপ্রাপ্ত), জাহিদ হোসেন গোরা ও সাইদুর রহমান। বিশেষ সংকটময় মূহুর্তে সদস্য সচিব হিসেবে মাঝে মধ্যে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী বরাবর সাংস্কৃতিক বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা রেখে এসেছে। সাংস্কৃতিক চর্চার ধারাবাহিকতায় বর্তমান নির্বাহী পরিষদ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছে তন্মধ্যে স্বাধীনতার ৪০ বৎসর পূর্তি, ৭ই মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবস ও মৃত্যু দিবস, গুণীজন সম্মাননা, জেলা ব্যাপী, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন সুধীমহলে প্রশংসা পেয়েছে। মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দসহ জেলা কালচারাল অফিসার ও নিয়মিত কর্মচারী নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস